নৈকট্যবিদ্যা
নৈকট্যবিদ্যা হল মানুষের স্থান ব্যবহার এবং আচরণ, যোগাযোগ ও সামাজিক মিথষ্ক্রিয়া উপর জনসংখ্যার ঘনত্ব এর প্রভাব সম্পর্কিত শিক্ষা।[১] একে ইংরেজিতে "প্রক্সিমিকস" (Proxemics) বলে।
হ্যাপ্টিক্স (স্পর্শ), কিনেসিক্স (শরীরের নড়াচড়া), ভোকালিক্স (প্যারাল্যাংগুয়েজ) এবং ক্রোনেমিক্স (সময়ের গঠন) এর মত অমৌখিক যোগাযোগের আলোচনার একটি উপবিভাগ।[২]
১৯৬৩ সালে সাংস্কৃতিক নৃতত্ত্ববিদ এডওয়ার্ড টি. হল এই শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন। "সংস্কৃতির বিশেষায়িত সম্প্রসারণ হিসাবে মানুষের স্থান ব্যবহার সম্পর্কিত আন্তঃসম্পর্কিত পর্যবেক্ষণ এবং তত্ত্ব" হিসাবে প্রক্সেমিক্সকে সংজ্ঞায়িত করেছেন।[৩] প্রক্সেমিক্স সম্পর্কিত তার মৌলিক গ্রন্থ "দ্য হিডেন ডাইমেনশন"-এ হল আন্তঃব্যক্তিক আচরণের ক্ষেত্রে প্রক্সেমিক আচরণ (স্থান ব্যবহারের) প্রভাবকে জোর দিয়েছিলেন। হলের মতে, প্রক্সেমিক্স এর আলোচনা কেবল দৈনিক জীবনের মানুষ একে অপরের সাথে কীভাবে মিথস্ক্রিয়া করছে সেক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং "[তাদের] বাড়ি ও দালানে কীভাবে স্থান এর ব্যবস্থাপনা হচ্ছে, এবং অবশেষে [তাদের] শহরগুলির নকশা কিরকম হচ্ছে" সেক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ।[৪] প্রক্সেমিক্স আন্তঃব্যক্তি যোগাযোগের একটি লুকানো উপাদান যা পর্যবেক্ষণের দ্বারা উন্মুক্ত হয় এবং সংস্কৃতির দ্বারা দৃঢ়ভাবে প্রভাবিত হয়।
মানব দূরত্ব
[সম্পাদনা]আন্তঃব্যক্তিক দূরত্ব
[সম্পাদনা]হল চারটি স্বতন্ত্র অঞ্চলে মানুষের (মানুষের মধ্যে আপেক্ষিক দূরত্ব) পারস্পরিক দূরত্বকে বর্ণনা করেছেন: (1) ঘনিষ্ঠ স্থান, (2) ব্যক্তিগত স্থান, (3) সামাজিক স্থান, এবং (4) গণ স্থান।
- ঘনিষ্ঠ দূরত্ব (আলিঙ্গন, স্পর্শ বা কানাকানি করার জন্য)
- নিকট পর্যায় – এক ইঞ্চিরও কম (এক থেকে দুই সেমি)
- দূর পর্যায় – ৬ থেকে ১৮ ইঞ্চি (১৫ থেকে ৪৬ সেমি)
- ব্যক্তিগত দূরত্ব (ভাল বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের সাথে মিথস্ক্রিয়ার জন্য)
- নিকট পর্যায় – ১.৫ থেকে ২.৫ ফুট (৪৬ থেকে ৭৬ সেমি)
- দূর পর্যায় – ২.৫ থেকে ৪ ফুট (৭৬ থেকে ১২২ সেমি)
- সামাজিক দূরত্ব (পরিচিতদের সাথে মিথস্ক্রিয়ার জন্য)
- নিকট পর্যায় – ৪ থেকে ৭ ফুট (১.২ থেকে ২.১ মি)
- দূর পর্যায় – ৭ থেকে ১২ ফুট (২.১ থেকে ৩.৭ মি)
- গণ দূরত্ব (জনসাধারণের সাথে কথা বলার জন্য)
- নিকট পর্যায় – ১২ থেকে ২৫ ফুট (৩.৭ থেকে ৭.৬ মি)
- দূর পর্যায় – ২৫ ফুট (৭.৬ মি) বা তার চেয়ে বেশি।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Proxemics"। Dictionary.com। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১৪, ২০১৫।
- ↑ Moore, Nina (২০১০)। Nonverbal Communication:Studies and Applications। New York: Oxford University Press।
- ↑ Hall, Edward T. (১৯৬৬)। The Hidden Dimension। Anchor Books। আইএসবিএন 978-0-385-08476-5।
- ↑ Hall, Edward T. (অক্টোবর ১৯৬৩)। "A System for the Notation of Proxemic Behavior"। American Anthropologist। 65 (5): 1003–1026। ডিওআই:10.1525/aa.1963.65.5.02a00020।